Location: Ranaghat Posted on: 12/8/2025 7:01:27 AM

৯০দশকের অনুষ্ঠান বাড়ির প্রীতি ভোজের ব্যাপারটা আজকের মতো এইরকম বুফে সিস্টেম ছিল না। চিনামাটির প্লেট ও কাচের গেলাসের বদলে খাওয়ানো হতো কলাপাতা ও মাটির খুড়িতে। তখন ছিল কাঠের ফোল্ডিং চেয়ার আর লম্বা টেবিল, যেখানে অতিথিদের সারিবদ্ধভাবে বসানো হতো। এক সারি শেষ হলেই আবার আরেক সারি। এই সারি পরিবর্তনের ভিড়টাই ছিল সবচেয়ে জমজমাট দৃশ্য। নাহ, তখন আজকের মত এত ক্যাটারিং এর রমরমাও ছিল না। খাবার পরিবেশন করতেন পাড়ার দাদা কিংবা অন্যান্য বয়োজ্যেষ্ঠরা। পরনে তাদের থাকতো ফতুয়া বা স্যান্ডো গেঞ্জি, সাদা ধুতি আর কোমরে লাল গামছা। আমরা ছোটোরা অপেক্ষা করে থাকতাম কোনো একটা ছোট্ট দায়িত্ব পাওয়ার জন্য। যদি ভাগ্যক্রমে নুন, লেবু আর জল পরিবেশনের দায়িত্বটা একবার পেয়ে যেতাম। তাহলে মুহূর্তের মধ্যেই বুকের ভিতর ধক করে একটা আনন্দ দোলা দিয়ে উঠতো। মনে হতো - আমাকেও কাজ দিল! আমি তাহলে এখন খুব দরকারি।😃 ছোট্ট হাতে মাটির খুড়িতে জল ভরার জন্য যখন টেবিলের দিকে এগিয়ে যেতাম, মনে হত যেন কোনও বিশেষ দায়িত্ব পালন করছি। ☺️ ফিরে এসে আবার গর্বভরে বড়দের জিজ্ঞেস করতাম - আর কিছু করতে হবে..??? তাদের হালকা হাসি দেখে মনে হতো - আমিও আজকে বড়দের দলের একজন! আরও মজার ছিল - এই সব ছোটোখাটো কাজে অংশ নিতে নিতে মনে মনে একটু একটু করে নিজের বড় হয়ে ওঠা অনুভব করা। স্টোর রুমের দিকে উঁকি মারা, কে কোথায় বসেছে সেটা খেয়াল রাখা, কার গেলাসে কতটা জল কমেছে সেটা দেখে দৌড়ে গিয়ে আবার ভরে দেওয়া এসবই ছিলো আমাদের আনন্দের আলাদা রাজ্য। আজ বড় হয়েছি, অসংখ্য কাজ করি, দায়িত্ব সামলাই - কিন্তু সেই এক গ্লাস জল পৌঁছে দেওয়ার মধ্যে যে তৃপ্তি, যে গর্ব, যে নিঃস্বার্থ আনন্দ ছিল, তা আর ফিরে পাই না।🥹 সেই দিনগুলোই তো আসলে আমাদের সবচেয়ে সুন্দর দিন ছিলো ছোট্ট দায়িত্বে বড় হয়ে ওঠার দিন।🥹